পতঞ্জলি যোগসূত্র: শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর দ্বারা ভাষ্য

আমরা একটি গল্প দিয়ে শুরু করব যা জ্ঞান দানের সর্বশ্রেষ্ঠ ও কার্যকরী উপায়।

বহু দিন আগে, এক সময় সমস্ত মুনি ও ঋষিরা ভগবান বিষ্ণুর কাছে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন এই কথা বলার জন্য যে, যদিও তিনি (ধন্বন্তরী অবতার) আয়ুর্বেদের মাধ্যমে অসুখ নিরাময়ের উপায় দিয়েছেন, তবুও মানুষ অসুস্থ হয়। তাঁরা এও জানতে চেয়েছিলেন যে যখন মানুষ অসুস্থ হয় তখন কি করা উচিত।

শুধু শারীরিক অসুস্থতাই নয়, কখনও কখনও ক্রোধ, লালসা, লোভ, ঈর্ষা ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন মানসিক আবেগজনিত অসুস্থতাও নিরাময়ের প্রয়োজন হয়। এই সব অশুদ্ধি থেকে একজন কিভাবে মুক্তি পেতে পারে? এর উপায় কি?

ঋষিরা যখন তাঁর কাছে নিজেদের বক্তব্য পেশ করলেন, তিনি আদিশেষকে (সচেতনতার প্রতীক) তাঁদের কাছে পাঠালেন, যিনি পৃথিবীতে মহর্ষি পতঞ্জলি হয়ে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন।

এইভাবে পতঞ্জলি পৃথিবীতে আসেন যোগের জ্ঞান দান করার জন্য।এইজ্ঞানই যোগসূত্র’ নামেপরিচিত।

    পতঞ্জলি বলেন ১০০০ মানুষ একত্রিত না হলে তিনি ‘যোগসূত্র’ আলোচনা করবেন না। সুতরাং সহস্র মানুষ তাঁর জ্ঞান শোনার জন্য বিন্ধ্য পর্বতমালার দক্ষিণ দিকে একত্রিত হলেন।

    পতঞ্জলির আরেকটি শর্ত ছিল। তিনি বলেন যে, তাঁর ছাত্রদের ও তাঁর মধ্যে তিনি একটি পর্দা রাখবেন, ছাত্রদের কেউ সেই পর্দা তুলতে পারবেনা। তিনি যতক্ষণ না জ্ঞানদান শেষ করছেন, সবাইকে কক্ষে উপস্থিত থাকতে হবে।

    পতঞ্জলি পর্দার আড়ালে থেকে ১০০০ মানুষকে জ্ঞান দান করছেন, প্রত্যেকের মধ্যে সেই জ্ঞান সঞ্চারিত হচ্ছে!

এ এক বিস্ময়কর তত্ত্ব, এমন কি ছাত্ররাও বিশ্বাস করতে পারছিল না কি করে তাদের এই জ্ঞান লাভ হচ্ছে। কি করে গুরু পর্দার আড়ালে থেকে একটি শব্দ উচ্চারণ না করে প্রত্যেকের মাঝে এই জ্ঞানের উপলব্ধি ঘটাচ্ছেন তা তাদের বিশ্বাস হচ্ছিল না।

    প্রত্যেকের এক বিহ্বলকর অবস্থা। প্রত্যেকে এমন এক অদম্য শক্তি, এমন এক অভাবনীয় উৎসাহ অনুভব করছিল যে তারা স্থিরভাবে তা ধারণ করতে পারছিল  না। কিন্তু তাদেরকে নিয়ম বজায় রাখতে হবে।  

    একটি ছোট ছেলেকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হয়েছিল। তাই সে স্থান ছেড়ে চলে যায়। সে মনে মনে ভাবল যে, সে যাবে এবং নিঃশব্দে ফিরে আসবে। আরেক জন কৌতুহলী হয়ে উঠল - “পর্দার আড়ালে গুরুদেব কি করছেন? আমি দেখতে চাই।”

    সে কি পর্দা তুলেছিল? পরের বুধবারে পতঞ্জলি যোগসূত্রে দেখুন!

এই গল্প থেকে আপনি কি খুঁজে পেলেন?

এই গল্পের মধ্যে রয়েছে বিশাল এক গভীরতা। পুরাণ কোন ব্যাখ্যা দেয় না। পুরাণে রয়েছে গল্প যার অন্তর্নিহিত অর্থের সন্ধান আমাদের করতে হয়। সুতরাং আপনাদের সবাইকে কি খুঁজে বার করতে হবে?

  • - গুরু একটি মাত্র শব্দও উচ্চারণ না করে কিভাবে প্রত্যেকের মধ্যে জ্ঞানের সঞ্চার করছিলেন?
  • - এখানে পর্দার রহস্য কি?

পতঞ্জলির গল্প পর্ব ১>>

 

Interested in yoga classes?